রাজনীতি

ভৈরবে দলীয় মনোনয়ন পেতে সরব নৌকা ও লাঙ্গল প্রত্যাশীরা

মোঃ ছাবির উদ্দিন রাজু ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দলীয় মনোনয়ন পেতে সরব হয়ে উঠেছে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রত্যাশীরা। ভোটের আগেই জয় পেতে নৌকা প্রত্যাশীরা নির্বাচনী মাঠে মরিয়া হয়ে উঠলেও কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থীদের মধ্যে দেখাগেছে সুনসান নিরবতা। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী চেয়ারম্যান প্রার্থীরা এলাকায় মতবিনিময়, গণসংযোগ ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সাথে মেম্বার প্রার্থীরাও দিন রাত তাদের প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।

এ উপজেলায় সম্ভাব্য চতুর্থ ধাপে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার অপেক্ষায় থাকলেও প্রার্থীরা নৌকার মনোনয়ন পেতে বিভিন্ন গ্রাম, হাটবাজার, পাড়ামহলায় গণসংযোগ, মতবিনিময়ের মাধ্যমে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ ভোটরদের দোয়া ও সমর্থন নেয়ার চেষ্টা করছেন। নিজেদের ও দলীয় সিনিয়র নেতাদের ছবি সম্বলিত পোস্টার, লিফলেট ও ডিজিটাল ব্যানার সাটিয়েছেন রাস্তার মোড়ে মোড়ে। চায়ের দোকান গুলোও সরব হয়ে উঠেছে নির্বাচনী আলোচনা পর্যালোচনায়। ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীগণ নৌকার মনোনয়ন পেতে দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথে নিয়মিত যোগাযোগের মাধ্যমে হাইকামান্ডের গ্রীন সিগন্যাল পাওয়ার চেষ্টা করছেন। এদিকে নিরপেক্ষ ভোট হবেনা এমন আশংকায় জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছেন না। কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনা অমান্য করে পদধারীরা এই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দে ভুগছেন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কেউ কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে এলাকায় প্রচার প্রচারণা চালিয়েছেন। আওয়ামীলীগের বেশিরভাগ প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন নৌকা পাওয়ার আশায় উপর মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন এবং ব্যক্তিগত যোগাযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। এদিকে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন (নৌকা প্রতীক) বরাদ্দ পেতে মোটা অংকের টাকা লেনদেন হতে পারে বলে একাধিক প্রার্থী ও সাধারণ ভোটারদের মাঝে গুণজন রয়েছে।

যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা বিচার করে যেন দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয় সেদিকে নজর রাখতে ক্ষমতাশীন দলের হাইকমান্ডের প্রতি অনুরোধ জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নৌকার একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য হওয়ার আশংকা করছেন তারা। ভৈরব পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি এস.এম বাকি বিল্লাহ বলেন, যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তার ভিত্তিতেই জননেত্রী শেখ হাসিনার নৌকার মনোনয়ন দেয়া হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমাদের নেতা বিসিবি সভাপতি আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপন এমপি’র এলাকায় অতীতে কখানো মনোনয়ন বাণিজ্য হয়নি। এখনও মনোনয়ন বাণিজ্য হওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। কিছু প্রার্থী ও সাধারণ মানুষের এমন ধারণা ভুল। কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো: শরীফুল আলম বলেন, বিএনপি দলীয়ভাবে ইউপি নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে বিরত রয়েছে।

আওয়ামীলীগের আমলে কখনো নিরপেক্ষ ভোট হয়নি, আর কখনো নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হবে সেটা আমরা বিশ্বাস করিনা। এ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনই ছিলো লোক দেখানো। দলের কেউ যদি সতন্ত্র প্রার্থী হয়ে এ নির্বাচনে অংশ নেন, সেটা তারা নিজ দায়িত্বে নিবেন। ভৈরব উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এনকে সোহেল জানান,নির্বাচন কমিশন আরো নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হতে,নৌকা পেলেই পাশ এমন কার্যক্রম থেকে বেরিয়ে আসতে হবে,প্রসাশন কে নিরপক্ষ নির্বাচন করার আহবান জানান।

উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন,- ১নং সাদেকপুর ইউনিয়ন: বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সরকার মোঃ সাফায়েত উল্লাহ (আওয়ামীলীগ), মো: ফজলুল হক মাস্টার (আওয়ামীলীগ), হাজী আব্দুল লতিফ মাস্টার (আওয়ামীলীগ), মোঃ হানিফ সরকার,মোঃ রাশিদ মিয়া,(জাতীয় পার্টি)মো: তোফাজ্জল হক (সতন্ত্র)। ২নং আগানগর ইউনিয়ন: সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম আহমেদ (আওয়ামীলীগ), মো: শফিকুল ইসলাম হীরা (আওয়ামীলীগ), মো: আনোয়ার হোসেন (আওয়ামীলীগ), সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো: হুমায়ুন কবীর (আওয়ামীলীগ), মো: বাছির আহমেদ (আওয়ামীলীগ), মোঃ হারুন মিয়া,মোঃ এরশাদ মিয়া,(জাতীয় পার্টি)মো: মুসলিম মিয়া (সতন্ত্র)। ৩নং শিমুলকান্দি ইউনিয়ন: সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো: বাবুল মিয়া (আওয়ামীলীগ), মো: আব্দুল আজিজ (আওয়ামীলীগ), মিজানুর রহমান ভূঁইয়া রিপন (আওয়ামীলীগ), বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান জোবায়ের আলম দানিছ (আওয়ামীলীগ), মো: আক্তার হোসেন মিনু (আওয়ামীলীগ), মো: সেলিম সরকার (আওয়ামীলীগ)। মোঃ সোহরাব হোসেন,মোঃ বশির আহমেদ (জাতীয়ত পার্টি)। ৪নং গজারিয়া ইউনিয়ন: বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার গোলাপ (আওয়ামীলীগ), মোঃ ফরিদ উদ্দিন খান (আওয়ামীলীগ), মো: নূরুল আলম সোহেল (আওয়ামীলীগ), মোঃ কাউসার আহমেদ (আওয়ামীলীগ), মো: আব্দুস ছালাম শাহরিয়ার (আওয়ামীলীগ), মোঃ ইমরান হোসেন ( জাতীয় পার্টি) আলহাজ্ব মোহাম্মদ সায়েম মিয়া (ইসলামী আন্দোলন), শাহাদাত হোসাইন কাউসার মোল্লা (সতন্ত্র)। ৫নং কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়ন: মো: লিটন মিয়া (আওয়ামীলীগ), বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মো: ফারুক মিয়া (আওয়ামীলীগ), মো: মাসুদ রানা (আওয়ামীলীগ), মজলিশ খান কামাল,নবী হোসেন ( জাতীয় পার্টি)আব্দুল্লাহ আল মামুন মাম্মী (সতন্ত্র), মো: জসিম উদ্দিন (ইসলামী আন্দোলন)। ৬নং শিবপুর ইউনিয়ন: আলহাজ্ব ফারুক উদ্দিন (আওয়ামীলীগ), বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মো: শফিকুল ইসলাম শফিক (আওয়ামীলীগ), এডভোকেট মোস্তফা কামাল (আওয়ামীলীগ), মো: মনিরুল ইসলাম মনির (আওয়ামীলীগ), মোঃ আসাদু্জামান, মোঃ হাসান সরকার,মাসুদ রানা,মোঃ মামুন সরকার,( জাতীয় পার্টি)মো: শাহিদুর রহমান শাহিদ (ইসলামী আন্দোলন)। ৭নং শ্রীনগর ইউনিয়ন: এডভোকেট আবুল বাসার (আওয়ামীলীগ), সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এডভোকেট মোস্তাক হোসেন (আওয়ামীলীগ), মো: হারুন অর রশিদ (আওয়ামীলীগ), মো: আতাউর রহমান আঙ্গুর (আওয়ামীলীগ), মোঃ মিজান মিয়া,মোঃ রফিকুল ইসলাম শফিক,( জাতীয় পার্টি)মোশারফ হোসেন হেলিম (সতন্ত্র)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *