বিভগীয় প্রতিবেদক:
কন্টেইনার হ্যান্ডলিং- এ তিন মিলিয়নস ক্লাবে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম বন্দর।
গত এক বছরে এই বন্দর কন্টেইনার হ্যান্ডলিং-এর ক্ষেত্রে ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে।
২০১৮ সালে যেখানে কন্টেইনার উঠানামা হয়ছিল ২৯ লাখ ৩ হাজার টিইইউস। সেখানে ২০১৯ সালে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং-এর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৩০ লাখ ৮৮ হাজার টিইইউস এ উন্নিত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনে কনফারেন্স হলে চট্টগ্রামে কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক্স এবং অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানান চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল জুলফিকার আজিজ।
মতবিনিময় সভায় বন্দর চেয়ারম্যান জানান, বছরে ৩০ লাখ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করে চট্টগ্রাম বন্দর কন্টেইনার হ্যাল্ডলিং-এর ক্ষেত্রে তিন মিলিয়ন ক্লাবে অন্তর্ভূক্ত। কন্টেইনার হ্যান্ডলিং-এ প্রবৃদ্ধির পাশপাশি সাধারণ কার্গো উঠানামায়ও উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। গত এক বছরে বন্দরে কার্গো উঠানামা হয়েছে ১০ কোটি ৩০ লক্ষ টন। এই খাতে প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।
বন্দর চেয়ারম্যান জানান, সামগ্রিকভাবে চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার ইয়ার্ড ও ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে বন্দরের ইয়ার্ডে ৫০ হাজারেরও বেশি কন্টেইনার রাখা সম্ভব হচ্ছে। ফলে বর্তমানে প্রবৃদ্ধির হারে কন্টেইনার পরিবহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও চট্টগ্রাম বন্দর তা হ্যান্ডলিং-এ সক্ষমতা অর্জন করেছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা আরো বৃদ্ধির লক্ষ্যে পতেঙ্গায় নতুন কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণের কাজ পুরোদমে চলছে। বে টার্মিনাল নির্মানের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরকে সম্প্রসারনের পাশাপাশি মিরসরাইয়ে নির্মাণাধীন দেশের বৃহত্তম শিল্পনগর ‘বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরকে’ সাপোর্ট দিতে সীতাকুণ্ড এলাকায় আরো এক টার্মিনাল নির্মাণের পর্যায়ের কাজ চলমান রয়েছে।
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, লয়েডস লিস্ট-এর জরিপে বিশ্বের ১০০ কন্টেইনারবাহী বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান অবস্থান ৬৪তম। যা ২০০৯ সালে ছিল ৯৮তম। ২০১৯ সালের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং পরিসংখ্যান অনুযায়ী বন্দর এ বছরের জরিপে আরো কয়েকধাপ এগিয়ে যাবে।
প্রেস ব্রিফিং-এ বন্দর চেয়ারম্যান তথ্য প্রকাশ করে বলেন, বন্দরে জাহাজের গড় অবস্থানকাল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে কন্টেইনারবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বহির্নোঙরে আসার এক দুই দিনের মধ্যেই জেটিতে ভিড়ছে। জাহাজ বহির্নোঙরে আসারপর একদিনও অপেক্ষা না করে জেটিতে ভিড়ার রেকর্ড রয়েছে। বন্দরে কি গ্যান্ট্রি ক্রেন সংযোজনের ফলে কন্টেইনার উঠানামায় গতি বেড়েছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ১২ থেকে ১৪টি জাহাজ থেকে একই সাথে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সম্ভব হচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায়, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বলিষ্ট নেতৃত্বে এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের সার্বিক সমন্বয়ের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের সমুদ্র বহিঃবাণিজ্য সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার আপ্রাণ চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘ভিশন ২০২১ ও ২০৪১’ অর্জনসহ এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চট্টগ্রাম বন্দর বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে চট্টগ্রাম বন্দর বদ্ধপরিকর।
মত বিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (প্রশাসন) জাফর আলমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।