ঢাকা, ৯ জুলাই- এ বছরের মধ্যেই ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটে এক্সপ্রেস স্পেশাল ট্রেন চালু হবে বলে জাতীয় সংসদে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন।
রোববার (৭ জুলাই) জাতীয় সংসদে কার্যপ্রণালী বিধির ৭১ বিধিতে জরুরী জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনের সংসদ সদস্য মো. মুজিবুল হক চুন্নু উত্থাপিত নোটিশের জবাবে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন এই আশ্বাস দেন।
কার্যপ্রণালী বিধির ৭১ বিধিতে জরুরী জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনের সংসদ সদস্য মো. মুজিবুল হক চুন্নু তাঁর উত্থাপিত নোটিশে বলেন, ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জে এগারোসিন্দুর, ঈশাখাঁ এবং কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস এই তিনটি ট্রেন চলাচল করে। যা যাত্রীদের চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।
হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ জেলার হাওরের মানুষের ট্রেনে যাতায়াতের এই রুটটিই একমাত্র রুট। হাজার হাজার যাত্রী এই রুটে ট্রেনে যাতায়াতের জন্য অপেক্ষমান থাকে। ট্রেনের অপ্রতুলতার কারণে এ সকল যাত্রীরা রাজধানীতে আসতে পারেন না।
মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি যোগ করেন, কিশোরগঞ্জ জেলার হাজার হাজার সরকারি-বেসরকারি কর্মচারী চাকরির কারণে ঢাকায় বসবাস করে। অথচ ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জে সরাসরি একটি ট্রেন চালু করা গেলে, এসব কর্মচারীরা দিনে দিনে অফিস করে আবার কিশোরগঞ্জে ফেরত যেতে পারতো। ফলে রাজধানী শহরের জনসংখ্যার চাপ এবং আধিক্য কিছুটা হলেও কমতো।
মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটে এক্সপ্রেস স্পেশাল ট্রেন চালুর যৌক্তিকতা তুলে ধরে আরো বলেন, এই রুটটি আমার জানামতে রেলের একটি লাভজনক রুট। কিশোরগঞ্জে এখন একটি ক্যান্টনমেন্ট হচ্ছে হাওর এলাকায় এবং একটি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও হচ্ছে। এ সমস্ত কারণে ট্রেনের বেশি প্রয়োজন।
বর্তমানে ট্রেনের মধ্যে এগারোসিন্দুর এক্সপ্রেসের মোট টিকিট ১৫৪টি, এগারোসিন্দুর গোধূলীর ১৮২টি, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের মোট টিকিট ১৭২টি। প্রত্যেকটা টিকিট টাইমের আগেই বিক্রি হয়ে যায়।
মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, আমার জেলা ঐতিহাসিকভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা। আমার জেলা এমনি গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের তিনজন রাষ্ট্রপতি আমার জেলার। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে যিনি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তিনি আমার জেলার। পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান সাহেব আমার জেলার। বর্তমানে মহামান্য রাষ্ট্রপতি উনিও আমার জেলার। শুধু তাই নয়, এই পার্লামেন্টের বর্তমান স্পিকার এবং সাবেক স্পিকার দু’জনের শ্বশুরবাড়িই আমার জেলায়। কিশোরগঞ্জে ৩০ লাখের উপর মানুষের বসবাস। তাই মাননীয় মন্ত্রীকে বলব, আমাদের একটা ট্রেন দেন।
জবাবে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, যে নোটিশটি মাননীয় সংসদ সদস্য দিয়েছেন, এটি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ। জনগণের কল্যাণের কথা চিন্তা করে কিশোরগঞ্জ এলাকার মানুষের কথা চিন্তা করে, খুব যুক্তিসংগতভাবেই মাননীয় সংসদ সদস্য নোটিশটি দিয়েছেন। যে কথাটি বলেছেন, তিনজন মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং দুইজন মাননীয় স্পিকারের শ্বশুরবাড়ি। সবমিলিয়ে তার নোটিশের সপক্ষে যে যুক্তি, সেটিকে আরো অনেক বেশি শক্তিশালী করেছে।
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন আরো বলেন, বর্তমানে কিশোরগঞ্জে তিনটি ট্রেন ছয়বার যাওয়া-আসা করে। একটি এগারোসিন্দুর প্রভাতী, এগারোসিন্দুর গোধূলী এবং কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস এই তিনটি ট্রেনের মধ্যে কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসে একটি এসি কোচ চালু রয়েছে। আমি আশা করছি যে, মাননীয় সংসদ সদস্যের যে দাবি এটি আমরা অচিরেই অর্থাৎ এ বছরের মধ্যেই পূরণ করতে পারব।
সম্পূরক হিসেবে মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি ভৈরব থেকে ট্রেনের ইঞ্জিন না ঘুরিয়ে কিশোরগঞ্জে সরাসরি যাওয়ার ব্যবস্থা করারও দাবি জানান।
জবাবে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন সেটি বাস্তবায়নে সরকারের সদিচ্ছার কথা উল্লেখ করে এ ব্যাপারেও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।