আন্তর্জাতিক প্রবাস

জাপানে টাইফুনের পর শক্তিশালী ভূমিকম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :  টাইফুন জেবির প্রভাব কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে জাপানের উত্তরাঞ্চলে।
রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৭। এতে দুইজন নিহত এবং প্রায় ৪০ জনের নিখোঁজ থাকার কথা জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় টিভি কেন্দ্র এনএইচকে। তারা ১২০ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে।

উত্তরাঞ্চলে হোক্কাইডো দ্বীপে ভূমিকম্পের আঘাতের পর প্রায় ৩০ লাখ বাড়ির বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন এবং একটি পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। তবে এতে সুনামির আঘাতের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে জাপানের আবহাওয়া সংস্থা।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) ভূমিকম্পের মাত্রা ৬.৬ এবং এর উৎপত্তিস্থল তমোকোমাই শহরে ভূপৃষ্ঠের ২৭ কিমি গভীরে বলে জানিয়েছে।

হোক্কাইডোতে ১৯৯৬ সালের পর এটিই সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। জাপানের পশ্চিমাঞ্চলে মঙ্গলবার ভয়াবহ টাইফুনের পর বৃহস্পতিবার এ ভূমিকম্প আঘাত হানল।

এদিন খুব ভোরে সাপ্পোরোর ৬২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্পের আঘাতের পর ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কিছু বাড়িঘর মাটিচাপা পড়ে। ভূমিকম্পের পর সাপ্পোরোর চিতোসে বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানের জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে এবং জাপানের দুর্যোগ দপ্তরের ২৫ হাজার সদস্যকে দুর্গত এলাকায় পাঠানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, সম্ভাব্য বড় ধরনের ঝুঁকি এড়াতে জনসাধারণকে স্থানীয় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে নির্ণয় করা কঠিন। তবে সরকার জনগণের প্রাণের নিরাপত্তাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। সবাইকে সর্তক হয়ে চলার জন্য বলা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার শিকোকু দ্বীপে আঘাত হানে টাইফুন জেবি। এটি পরে উত্তর দিকে ধেয়ে যায়। এরপর হোনশু দ্বীপের পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানে। এতে সেখানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পরে জাপান সাগরের দিকে গিয়ে পূর্ব দিকে যাওয়ারা পর জেবি দুর্বল হয়ে পড়ে।

জেবির তাণ্ডবে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ওসাকা ও কিয়েতোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেবির প্রভাবেই হোক্কাইডো দ্বীপে ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। তবে এখানে জেবির চেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ভূমিকম্পের আঘাতের পর।

ভূমিকম্পের পর বিস্তৃত এলাকাজুড়ে আফটার শক অনুভূত হয়। নিখোঁজ লোকজনের সন্ধানে তল্লাশি অভিযান চালানোর পাশাপাশি ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ফেলার কাজে সাহায্য করতে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার স্বেচ্ছাসেবীরা হোক্কাইডোর উদ্দেশে যাত্রা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *