ঈদুল ফিতর ২০১৮ জাতীয় দেশজুড়ে বাংলাদেশ

আসছে ঈদ! প্রতিনিয়ত যানজট! ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কের খানাখন্দে যাত্রী দুর্ভোগ বাড়ছে!

দেশের সবচেয়ে ব্যস্ততম মহাসড়ক হলো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। দেশের রাজধানী ঢাকা এবং বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের সাথে এই সংযোগ সড়কটিতে পড়েছে কুমিল্লা জেলার ১০৪ কিলোমিটার অংশ। এই ১০৪ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার রাস্তার বিভিন্ন অংশে রয়েছে বিভিন্ন সমস্যা। কোথায়ও রয়েছে রাস্তার পিচ উপরে উঠে অসমতল হয়ে গেছে। কোথায়ও রয়েছে কিছুটা ভাঙাচুরা আবার কোথায় রয়েছে রাস্তার কালো পিচ উঠা। ফলে এই ৩৫ কিলোমিটারের রাস্তার সমস্যার কারণে একদিকে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট আবার অন্যদিকে দেখা দিচ্ছে নানা দুর্ঘটনা। ফলে আসন্ন রোজার ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের পড়তে হতে পারে নানা বিড়ম্বনায়। কিন্তু এই বিড়ম্বনা মানতে নারাজ কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোফাজ্জল হায়দার। তিনি জানান, ঈদের আগেই যাতে মহাসড়ক কুমিল্লা অংশের ১০৪ কিলোমিটার রাস্তার সকল সমস্যা সমাধান হয় সেই জন্য চলছে পৌনে ৬ কোটি টাকার বিশাল কর্মযজ্ঞ। : কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা জেলার দক্ষিণে চৌদ্দগ্রাম এবং উত্তরে দাউদকান্দি পর্যন্ত এই অংশে ৮টি উপজেলার প্রায় ১০৪ কিলোমিটার রাস্তা পড়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অংশে। দেশের অন্যতম প্রধান এই ব্যস্ততম মহাসড়কটি বর্তমানে ফোর লেনের আওতায় আসার পর থেকে রাস্তার সার্বিক অবস্থা দেশের অন্য মহাসড়কগুলোর তুলনায় কিছুটা ভাল হলেও এখানেও রয়েছে নানাবিধ সমস্যা। এই সমস্যাগ্রস্ত রাস্তার পরিমাণ রয়েছে প্রায় ৩৫ কিলোমিটারের মত। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কনকাপৈত গ্রামের স্কুুল শিক্ষক আবদুর রহমান বলেন, মহাসড়কের  চৌদ্দগ্রাম অংশের প্রায় দুই দিক দিয়েই রাস্তা উঁচু-নিচু হয়ে গেছে। যার কারণে গাড়িগুলো হেলেদুলে যখন চলাচল করে। বিশেষ করে এই অসমতলের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রামের বিলাসবহুল যাত্রীবাহী বাসগুলো তাদের গতি ঠিক রাখতে পারে না। যার কারণে অনেক সময় দুর্ঘটনায় পতিত হয়। সদর দক্ষিণ উপজেলার ব্যবসায়ী সাধন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, মহাসড়কের কুমিল্লা সীমান্তের বিভিন্ন অংশেই রাস্তার কালো পিচ উঠে গেছে। ফলে গাড়ি স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না। যার কারণে অনেক সময় স্লো হয়ে যায়। এতে যানজটের কবলে পড়ে মহাসড়ক। এই বিষয়ে কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোফাজ্জল হায়দার জানান, কুমিল্লার ১০৪ কিলোমিটার সীমান্তে কোন বড় ধরনের খানাখন্দ না থাকলেও বেশকিছু সমস্যা রয়েছে। যার কারণে যাত্রীদের কিছু ভোগান্তি হচ্ছে। আশা করি ঈদের আগেই এই ভোগান্তি আমরা পুরাপুরি দূর করতে পারব। মহাসড়কের কুমিল্লা সীমান্তের রাস্তার টেন্ডার হয়ে ওয়াক অর্ডার পর্যন্ত হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে আমরা রেটিংয়ের কাজও শুরু করে দিয়েছি। বলতে পারেন এখন পর্যন্ত ৮০ ভাগ রেটিংয়ের কাজ শেষ হয়ে গেছে। এখন বাকি কাজ শুরু হবে। পুরো ১০৪ কিলোমিটারের জন্য আমাদের ৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ইনশাল্লাহ ঈদের আগেই ঘরমুখো যাত্রীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসগকের কুমিল্লা অংশ দিয়ে আরামে এবং নিরাপদে যেতে সক্ষম হবে। কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, মহাসড়কের সার্বিক বিষয় নিয়ে আমি প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছি। যাতে ঈদে আসা এবং ফেরত যাত্রীদের কোন ভোগান্তি না হয়। তিনি বলেন, ২১ মে থেকে মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছি। যে সকল গাড়ি পুরাতন এবং স্লো-ভাবে চলবে তাদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে রাস্তা থেকে তুলে নেয়া হবে। ঈদের আগ পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। : কুমিল্লা-১০ নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য ও পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মোস্তাফা কামাল ওরফে লোটাস কামাল জানান, শুধু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক না, কুমিল্লা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে সিলেট মহাসড়কটিও দ্রুত সংস্কার করা হবে। যাতে যাত্রীদের কোন কষ্ট না হয়। আমাদের এ অংশে যে সকল রাস্তা খারাপ রয়েছে সেই বিষয়ে আমি সেতমন্ত্রী ও সচিবের সাথে কথা বলেছি। আশা করি দ্রুত তা শেষ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *