জাতীয়

লালমনিরহাটে সন্ধ্যা হলেই নামে হিমবাহ ঠান্ডা

স্থানীয় প্রতিবেদক:

তিস্তা, ধরলা, রতনাই-এই তিন নদী ঘেরা উত্তরের জনপদ লামনিরহাট। দেশের অন্যান্য জনপদের চেয়ে এই জেলায় হিমবাহ, কুয়াশা, শীত একটু আগেই চলে আসে। তাই এখানকার মানুষের কষ্ট অনেক বেশি।

জেলা ঘুরে দেখা যায়, এবার কুয়াশার প্রকোপ তেমন চোখে পড়ছে না। তবে দিনের বেলা প্রচুর রোদ থাকলেও বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে বাড়ে হিমবাহ-ঠাণ্ডা।

স্থানীয় বাসিন্দা তায়জুল, কোরবান, আশকার আলী বলেন, ‘এবার ঠাণ্ড অন্যরকম। দিনের বেলা রইদ (রোদ) পড়ে। শরীল (শরীর) ঘামে। এত গড়ম, ফির রাইতে ঠাণ্ডা (আবার রাতে ঠাণ্ডা)। অন্যবার মাইনষে পৌষ মাসৎ ঠাণ্ডা কাপড় বাইর করছিল (অন্যবার মানুষ পৌষ মাসে শীতের কাপড় বের করছিল)। এবার কার্তিক মাসের শুরু থেকি রাইতের কনকনা ঠাণ্ডাত কাপড় পরা নাগে (এবার কার্তিক মাসের শুরুতেই কনকনে শীতের জন্য কাপড় পরা লাগছে)।’

বৃদ্ধ জরিনা বেগম বলেন, ‘এবার তো দিনের বেলা অত জার পরে নাই, রাইতৎ খালি জার নাগে। করোনাৎ, বানৎ হামার অবস্থা শ্যাষ। গেলোবারের জার ভুইলব্যার পাবানচং না বাহে, এইবার যে ফির কি হয় (এবার দিনের বেলা ঠাণ্ডা পরেনি, শুধু রাতের বেলা ঠাণ্ডা লাগে। করোনা, বন্যাতে আমাদের করুন পরিস্থিতি। গত বছরের ঠাণ্ডা এবারও ভুলতে পারছি না, এবার আবার কী যে হয়)।’

জেলার বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, দোকানে ক্রেতা নেই। মালামালও তেমন মিলছে না। কিন্তু তুলনামূলক ভিড় বেশি থাকা ফুটপাতের দোকানগুলোতেও নেই মালামালের পশরা।

পাইকারি কাপড় বিক্রেতা রাবেয়া ট্রেডিং এর মালিক সুমন বলেন, এবার এখনও শীতের কাপড় আনিনি। গার্মেন্টস কাপড় ব্যবসায়ী তপন কুমার বলেন, এবার এখনও ঢাকা যাওয়া হয়নি। আগামী সপ্তাহে যাব, শীতের কাপড় নিয়ে আসব।

তুলনামূলক ভিড় লেগে থাকে ফুটপাতের দোকানগুলোতে। কিন্তু ফুটপাতের ব্যাবসায়ী এরশাদুল বলেন, এবার বেচাবিক্রি ভালো না। ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, এবার এখনো মোকামে যাইনি।

কয়েকজন লেপতোষক ব্যবসায়ী জানান, তারা একেকটি লেপ বা তোষক বানিয়ে বিক্রি করলে মজুরিসহ তাদের ৫০০-৬০০ টাকা লাভ হয়। কিন্তু এবার তাদের ব্যবসা এখনও জমেনি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, করোনার কারণে এবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *