মোঃ নজরুল ইসলাম, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদর এলাকায় অবৈধ ভাবে দখল ও ভরাটের ফলে অস্তিত্ব হারিয়েছে প্রায় অধিকাংশ খাল। যেগুলো কোনো মতে টিকে আছে সেগুলোরও প্রবাহ শক্তি নেই। তাই স্বাভাবিক বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় প্রধান প্রধান সড়ক ও অলিগলি। একটু বেশি বৃষ্টি হলেতো কথাই নেই সদর এলাকার প্রায় সবকয়টি অলিগলি ও বেশ কিছু প্রধান সড়ক বড় বড় খালে রূপ নেয়। আর এতে করে উপজেলা সদর এলাকাবাসীর জীবনে নেমে আসে সীমাহীন দুর্ভোগ। শুক্রবার দিবাগত রাতে ভারী বর্ষণের ফলে পানিতে তলিয়ে যায় উপজেলা সদরের পুরো মাষ্টার পাড়া এলাকার প্রায় ৫’শত পরিবার। আর এই পানিতে এসে যুক্ত হয় আশ-পাশের ৩টি পুকুরের মাছ। শনিবার দিনভর পানি জমে থাকায় এলাকার প্রধান সড়কের উপরে মাছ ধারায় মেতে উঠেন স্থানীয়রা। আর এই দৃশ্য দেখলে যেকারো মনে হবে এটি একটি ডুবা অথবা খাল। জানা যায়, গোমতী নদীর পাড়ের মুরাদনগর কলেজ পাড়া এলাকার বদ্দার বিল থেকে মাষ্টার পাড়া পর্যন্ত একটি খাল ছিল। কালের বিবর্তনে এই খালের কোনো চিহ্ন খোঁজে পাওয়া না গেলেও একটি ব্রিজ থাকার কারণে বোঝা যায় এখানে খাল ছিল। স্থানীয় বাসিন্দা খলিলুর রহমান বলেন, প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে খাল দখল করে বাড়িঘর
নির্মাণ করায় বর্তমানে এখানে খালের কোন অস্তিত্বই নেই। ফলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে মুরাদনগর উপজেলা সদরের
ঐতিহ্যবাহী মাষ্টার পাড়া এলাকাসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থায়ী জলাবদ্ধতায় পরিণত হয়। তিনি আরো বলেন তাদের এই দূর্ভোগ এর চিত্র বহুবার সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলেও কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি স্থানীয় প্রশাসন। জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তির জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে বহুবার। তারা শুধু উচ্ছেদ প্রক্রিয়া চলছে এই বলে আমাদেরকে আশ্বস্ত করেন। এভাবে চলতে থাকলে
বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে এই এলাকাটি। এটি সদরের অভিযাত এলাকা হওয়ার পরেও জলাবদ্ধতার কারণে ভালো কোন ভাড়াটিয়া এখন আর আসতে চায় না। বছরের যে কোন সময় বৃষ্টি হলেই আমাদের পানি বন্দি হয়ে পড়তে হয়। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, খালের উপর অবৈধভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণ করার বিষয়টি নজরে এসেছে। যারা অবৈধভাবে এসব খাল দখল করেছে আমরা তাদের একটি নামের তালিকা জেলায় পাঠিয়েছি। সেখান থেকে অনুমতি পেলেই উচ্ছেদ কর্যক্রম পরিচালনা করে এসব অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে খাল উদ্ধার করা হবে।