ভৈরব প্রতিনিধি: করোনা মহামারি প্রতিরোধে ভৈরবে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত না করে এবং নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অপ্রয়োজনীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখায় এবং ভেজাল মসলা উৎপাদন করায় ফ্যাক্টরির মালিকসহ ৩৩ জনকে র্যাব বিশেষ অভিযান পরিচালনা
করে আটক করে। পরে তাদের ভ্রাম্যমান আদালতে মাধ্যমে ৪ লক্ষ ৭৪ হাজার ৫শ টাকা জরিমান করা হয়েছে।
২৮ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভৈরব মোবাইল বাজার, কাপড় পট্টি, চকবাজার, লোহাপট্টিসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লুবনা ফারজানা। এ অভিযানে সহযোগীতা করেন র্যাব-১৪, সিপিসি-৩ ভৈরব ক্যাম্পের সিনিয়র সহকারী পরিচালক চন্দন দেবনাথসহ র্যাব সদস্য ও ভৈরব থানা পুলিশের সদস্যরা।
এ সময় ভেজাল মসলা ফ্যাক্টরিতে অভিযান পরিচালনা করে ফ্যাক্টরির মালিক আলমগীর ও ক্রেতা আনোয়ার হোসেন কে আটক করা হয়। এছাড়া ভৈরব বাজারে অপ্রয়োজনীয় দোকানপাট খোলা রাখায় কালাম মিয়া, শামসুল আলম, মোবারক হোসেন, সেলিম মিয়া, শাজাহান মিয়া, সুমন সরকার, সাইদুর রহমান, অহিদ মিয়া, কবির রহমান, শামসুল ইসলাম, শাহীন, শামীম, ইফাত, রবিন, বাতেনুল ইসলাম, মোশারফ হোসেন, সিরাজ মিয়া, ফাহিম আহম্মেদ, আল আমিন, আনোয়ার হোসেন, রাজীব, আলী হোসেন, আসিফ, মোহাম্মদ আলী, তানভির, শিপন, কবির আহম্মেদ, সেলিম মিয়া, মোমিন মিয়া, জুয়েল ও সজিব মিয়াকে অর্থদন্ড প্রদান করা হয়।
জানা যায়, সারা বিশ্বের ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারি বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। করোনা প্রতিরোধে সরকার বাংলাদেশে বেশ কিছু জায়গায় লকডাউন ঘোষনা করেন। ভৈরবেও লকডাউন অবস্থায় রয়েছে দীর্ঘদিন যাবত। সেই লকডাউন অমান্য করে ভৈরব বাজারে অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন দোকানপাট খোলা রেখে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখে ব্যবসা পরিচালনা করে কিছু ব্যবসায়ী। এমন তথ্যের ভিত্তিতে ভৈরব বাজারে অভিযান পরিচালনা করে ৩১ জন ব্যবসায়ীকে আটক করে র্যাব। পরবর্তিতে ভৈরব রানীর বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে একটি ভেজাল মসলা ফ্যাক্টরিতে মালিক ও ক্রেতাসহ ২ জন আটক করা হয়।
র্যাব-১৪, সিপিসি-৩ ভৈরব ক্যাম্পের সিনিয়র সহকারি পরিচালক চন্দন দেবনাথ বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ৫ মে পর্যন্ত নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান ছাড়া অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় দোকানপাট খোলা না রাখার নির্দেশনা রয়েছে। তারা সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে দোকান খোলা রাখায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ ছাড়া গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভৈরব রানীর বাজারের লোহাপট্টি এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি মসলা ফ্যাক্টরিতে ভেজাল মসলা তৈরীরত অবস্থায় ফ্যাক্টরি মালিক আলমগীর ও বিভাগীয় শহর সিলেটের একজন ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনকে আটক করা হয়েছে। ব্যবসায়ী আলমগীর দীর্ঘদিন যাবৎ প্রশাসনের চক্ষু আড়ালে রং, তুশ, কুড়া,ভূষি ও ইটের গুড়া দিয়ে তৈরী ভেজাল মসলার ব্যবসা করে আসছে। তিনি এই ভেজাল মসলা ভৈরব, আশুগঞ্জ, বি-বাড়িয়া, সিলেট, সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে থাকে। এ রকম অভিযান অব্যহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লুবনা ফারজানা বলেন, ভৈরব বাজার লকডাউন অমান্য করে অপ্রয়োজনীয় দোকানপাট খোলা রাখায় ৩১ জন ব্যবসায়ীকে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও ভেজাল মসলা ব্যবসায়ী আলমগীর ও ক্রেতা আনোয়ার হোসেন কে ৪ লক্ষ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ২ বছরের জেল দেয়া হয়েছে। মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক ভেজাল মসলা তৈরীর ফ্যাক্টরিটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। মানুষ যেন লকডাউন অমান্য না করে এবং ঘরে থাকে করোনা প্রতিরোধে সহায়তা করেন সেজন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।