জাতীয়

ভৈরবে হাজি বাহার মিয়া পাদুকা মার্কেটের শ্রমিকদের মানবেতর জীবন যাপন

জয়নাল আবেদীন রিটন, বিশেষ প্রতিনিধি:
করোনা ভাইরাসের কারণে কাজকর্ম বন্ধ থাকায় ভৈরবের হাজি বাহার মিয়া পাদুকা মার্কেটের সহশ্রাধিক শ্রমিক তাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। পাদুকা কারখানাগুলো বন্ধ হওয়ায় শ্রমিকদের রোজী রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় দু মাস যাবত। কবে নাগাদ আবার পাদুকা কারখানা চালু হবে তার কোন নিশ্চিয়তা নেই। ফলে হতাশায় আছেন এ সকল পাদুকা শ্রমিকগণ। তাদের দাবী সরকার যদি এই দুর্যোগ মুহুর্তে তাদের কোন রকম প্রনোদনা দিয়ে সাহায্য করেন তাহলে হয়তো কোন রকমে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে দুবেলা খেয়ে পড়ে বাচতে পারবে। ভৈরবে ছোট-বড় প্রায় ১০ হাজার পাদুকা কারখানা রয়েছে । এর মধ্যে শহরের সম্ভুপুর এলাকায় এলাকায় রয়েছে হাজি বাহার মিয়া পাদুকা মার্কেট। এ মার্কেটে সহশ্রাধিক শ্রমিক কাজা করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। বর্তমানে দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে শিল্প কারভানা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। এসব পাদুকা কারখানায় সারা বছর টুকটাক পাদুকা তৈরী হলেও বছরের এ মৌসুমে কারখানার মালিক শ্রমিক সবাই দির-রাত পাদুকা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করে । কিন্ত করোনা ভাইরাসের কারনে গত দেড় মাস যাবত কারখানায় পাদুকা তৈরী বন্ধ রয়েছে। এমতাবস্থায় শ্রমকিরা কোন উপায়ন্তর না দেখে সরকারের পক্ষ থেকে সাহায্য সহযোতি কামনা করছেন।

শ্রমিকরা বলেন, করোনা ভাইরাস আসার পর আমাদের কর্ম গেছে বন্ধ হয়ে। আমরা সাধারণ মানুষ। আমরা কর্ম করে খাই। এখন আমাদের চলাফেরা অনেক কষ্ট। আমরা আমাদের ছেলে মেয়ে নিয়ে বড় বিপদের মধ্যে আছি। দুবেলা পেটপুরে ভাত খেতে পারিনা। ছেলেমেয়ে দশটা টাকা চাইলেও দিতে পারিনা। এর চেয়ে দুঃখ আরকি আছে। সরকারের কাছ থেকে যদি কোন সাহায্য পেতাম তাহলে আমরা একটু ভাল থাকতাম।

লেইছ ফুটওয়ার কারখানার মালিক মোঃ এরশাদ আলী আকাশ, করোনার প্রার্দুভােেবর কারণে সারা বিশ্বের মানুষের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে গেছে। এ শিল্পের সাথে জড়িত প্রায় কয়েক লক্ষ শ্রমিক। কারখানা রন্ধ হওয়ার পর থেকে আমরা যারা কারখানার মালিক আছি আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি শ্রমিকদের পাশে দাড়াতে। এখন আমরা নিজেরাই চলতে পারছিনা।

ভৈরব পাদুকা কারখানা মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক সবুজ মিয়া , আমাদের ভৈরবে ১০-১২ হাজার জুতা তৈরির ফ্যাক্টরী রয়েছে। এখন আমাদের হল সিজনলী ব্যবসা। প্রায় দুমাস যাবত লকডাউনের জন্য আমরা খুব ক্ষতিগ্রস্থের মধ্যে আছি। যেহেতু সরকারের নির্দেশনা আমাদের মানতে হয় আমরা ফ্যাক্টরী বন্ধ রাখছি। ফ্যাক্টরী বন্ধ থাকার কারণে আমরা মাল ডেলিভারি ও প্রডাকশন দিতে পারছিনা। সরকারের কাছে আমার আকুল আবেদন সরকার যদি কোন ত্রানের মাধথ্যমে শ্রমিকদের দিকে সুদৃষ্ট দেন তাহলে আমাদের শ্রমিকরা দুবেলা খেয়ে পড়ে বেচে থাকবে।

কিশোরগঞ্জ জেলা পাদুকা শ্রমিক ইউনিয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, সাবির উদ্দিন রাজ, করোনার কারণে শ্রমিকরা প্রায় দুমাস যাবত ঘরে বসা। কোন কাজকর্ম নেই । শ্রমিকদের দুখ-দুর্দশা তুলেধরে আমরা ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যা এবং বিভিন্ন এগ্রিম্যান চেয়ারম্যানদের কাছে আবেদন করেছি । কিন্তু আমাদের শ্রমিকরা এখনো পর্যন্ত কোন রকম আর্থিক সহযোগিতা পায়নি। তাই আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি আর্থিক সহযোগিতা বা ত্রান দিয়ে আমাদেরকে বাচান।

উপজেলা নি র্বাহী অফিসার লুবনা ফারজানা জানান, পাদুকা শিল্পকে সরকার প্রণোদণা প্যাকেজের আওতায় নিয়ে এসেছে । এ পেশার ব্যবসায়ীরা যদি প্রণোদণা সুবিধা নিতে চায় । তাহলে তারা ব্যাংকে যোগাযোগ করে নিতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *