মোশারফ হোসেন শ্যামল, বিশেষ প্রতিনিধি: ভৈরবে ফেসবুক ব্যবহার কারীদের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুক হ্যাক করে টাকা চাওয়ার বিষয়টি। যদিও মোটা অঙ্কের টাকা চাওয়ার অভিযোগ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। টাকা লেনদেন করেছেন এমন অভিযোগও আসেনি এ পর্যন্ত।
” জরুরী ২০০০ টাকার ব্যবস্থা করার যাবে কি? টাকাটা রাত ৮টায় পাঠিয়ে দেব” এমনি ভাবে মিনতি করে চাওয়া হচ্ছে ফেইসবুক ব্যবহার কারীদের আইডি হ্যাক করে ম্যাসেণ্জারের মাধ্যমে। ভূক্তভোগিরা জানান যদিও এপর্যন্ত কোন লেনদেন হয়নি তারপরও এতে করে আমাদের সম্মান নষ্ট হচ্ছে।
ভৈরব উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ মো: সায়দুল্লাহ মিয়া, বিএনপি সভাপতি মো রফিকুল ইসলাম, পৌর প্যানেল মেয়র আল – আমিন , ভৈরব থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত ওসি (তদন্ন) আবু তাহের মিয়া, জগন্নাত পুরের কবির সহ আরও প্রায়, ২০/৩০ জনের আইডি হ্যাক করে টাকা চাওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগিরা বলেন- যেহেতু হ্যাকাররা আইডি হ্যাক করে টাকা চাইতে পেরেছে, পরবর্তীতে আরও নগন্ন কাজ করতে পারে তারা। বর্তমানে ফেইসবুক আইডি হ্যাক আতংকে আছে হাজার হাজার মানুষ। এই হ্যাক আতংক থেকে মুক্তি পেতে সরকারের কড়া নজরদারী দাবী করছেন ভুক্তভোগি ফেইসবুক আইডি ব্যবহারকারীরা। হ্যাকার বা অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন করেন তারা।
শুধু সাধারন মানুষ নয় ,পুলিশও এখন হ্যাকাদের আওতাভুক্ত। গত চার মাস আগে ফেসবুক আইডি হ্যাকের তালিকায় ছিল উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সচিব আব্দুল হেকিম রায়হান, শহর আওয়ামীলীগ নেতা হাসেম, ছাত্রলীগ নেতা জুয়েল, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক লিটন ও আইনজীবি এ্যাড: সৈয়দ এনামুল হকসহ অসংখ্য লোকজন। গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে বেশ কয়েকটি ঘটনায় ভৈরব থানা পুলিশের কাছে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করেন ভূক্তভোগীরা। কিন্তু হ্যাকার চক্রের কাউকে এখন পর্যন্ত আইনের আওতায় আনতে পারেনি প্রশাসন। ফেসবুক হ্যাক করে টাকা চাওয়ার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের লোকজনসহ প্রশাসনকেও।
তথ্য ও প্রযুক্তি এই যুগে বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে স্কুল-কলেজ পড়োয়া শিক্ষার্থী, উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণী, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের লোকজনসহ প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদেরও আইডি রয়েছে। এক কথায় সরকারি-বেসরকারি, কর্মকর্তা-কর্মচারী, নেতা-কর্মী, ছাত্র-শিক্ষকসহ সুশীল সমাজের লোকজনের মিলন মেলার নাম ফেসবুক। এ কারণে কোনো না কোনো ভাবে ফেসবুকে একজন অপরজনের সাথে যুক্ত রয়েছে। ফলে সহজেই যে কোনো ধরণের বিষয়ে লেখা বা ছবি মুহুর্তেই সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সে হিসেবে যতটা ভাল কাজের সফলতা প্রকাশ পায়। তার চেয়ে অধিক বেশি মন্দ কাজের প্রভাব পড়ে। তাই, ডিজিটাল অপরাধীরা ফেসবুকেও সক্রিয় রয়েছে। ফলে সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই ফেসবুক হ্যাকের কারণে যেমন অনেকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হন। তেমনি একই সাথে সামাজিক ভাবেও অনেকে সম্মানহানী, মানুষিক যন্ত্রণা, হয়রানী ও দু:শ্চিন্তায় পড়েন।
এবিষয়ে ভৈরব থানার ওসি বাহালুল খান বাহার বলেন মুখে মুখে ফেসবুক আইডি হ্যাকের বিষয়টি কয়েকজনের নিকট থেকে শুনেছি কিন্তু লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে আমরা মাননীয় পূলিশ সুপার মহোদয়ের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব ।