মোঃ ছাবির উদ্দিন রাজু কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে খুনের মামলার প্রধান আসামী মোহাম্মদ সাফায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী ওয়ারেন্ট জারি করেছেন আদালত। গ্রেফতারী ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী হয়ে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে এলাকায় প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামের মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের পুত্র ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাফায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে কয়েকটি খুনের মামলা রয়েছে। তারমধ্যে (২০১৭ সালে ২ অক্টোবর ভৈরব থানায় দায়েরকৃত মামলা নং ৩,) আওয়ামীলীগ নেতা মানিক হত্যা মামলার প্রধান আসামী সাফায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জিআর আদালত ১, গ্রেফতারী ওয়ারেন্ট জারি করে ভৈরব থানার ওসিকে ওয়ারেন্ট তামিল করার আদেশ দেন। মানিক খুনের মামলার বাদী সুজন মিয়া জানিয়েছেন, তার বাবা মোহাম্মদ মানিক মিয়া সাদেকপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় ইউপি চেয়ারম্যান সাফায়েত উল্লাহর নেতৃত্বে মানিক মিয়াকে হত্যা করে ৪৮টি টুকরো করে। ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি হত্যা সংঘটিত করেন সাফায়েত উল্লাহ ও তাঁর সমর্থনের লোকজন। আওয়ামীলীগ নেতাসহ কয়েকটি খুনের মামলার আসামী হয়েও নৌকার মনোনয়ন পেয়ে এলাকায় দিব্যি ঘুরাঘুরি ও প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণা চালালেও আইনশৃংখলা বাহিনীর নিরব ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। সে তার পিতার হত্যাকারীর গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
ভুক্তভোগী কামরুজ্জামান দুলালের অভিযোগ, সাফায়েত উল্লাহ এলাকায় এক বছরের ভিতর কয়েকটি হত্যাকান্ড সংঘটিত করেছে। মানিক হত্যা মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী ওয়ারেন্ট জারি করেছে আদালত। একজন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী এলাকায় বীরদর্পে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতংক বিরাজ করছে এবং আইনের প্রতি মানুষের আস্থা কমছে। সাদেকপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ তোফাজ্জল হক বলেন, এলাকায় কয়েকটি খুনের মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী হয়েও সাফায়াত উল্লাহ আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছে। ফৌজদারী অপরাধের আসামী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে সমস্যা না হলেও তাঁর বর্তমান চেয়ারম্যান পদ বহাল থাকার কথা না। কিন্তু কিভাবে, কোন শক্তির বলে বহাল রয়েছে তা বোধগম্য নয়। গ্রেফতারী ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী হয়ে নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী চরম হতাশায় ও আতংকে ভুগছে। সাফায়েত উল্লাহর ছোট ভাই মোহাম্মদ আল আমিন সরকার জানান, এলাকায় কয়েকটি খুনের ঘটনা ঘটেছে সত্য। তবে ওই খুনের সাথে তাঁর ভাই জড়িত নন। এলাকার কিছু লোক হয়রানি করার উদ্দেশ্যে খুনের মামলায় তার ভাইসহ অনেককে মিথ্যে আসামী করে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেন। তবে আদালত গ্রেফতারী ওয়ারেন্ট আদেশ জারি করছেন বলে স্বীকার করেন। বড় ভাই ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নৌকার মনোনয়ন পাওয়ায় এলাকাবাসীর সাথে গণসংযোগ করা হচ্ছে। গত ১ডিসেম্বর সাফায়েত উল্লাহ নামে আদালত থেকে একটি ওয়ারেন্ট আদেশপত্র পাঠানো হয়েছে। আদালতের আদেশে আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন ভৈরব থানার ওয়ারেন্ট অফিসার এএসআই রেজাউল করিম। এবিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, গতকাল তিনি যোগদান করেছেন, গ্রেফতারী ওয়ারেন্টের বিষয়টি তিনি অবগত নন। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান ওসি। মানিক হত্যা মামলার গ্রেফতারী ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী ও নৌকার প্রার্থী সাফায়েত উল্লাহর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।