জাতীয়

নরসিংদী জেলা কারাগারে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে ৫ গুন বেশি বন্দী তাদের সংকুলানে হিমশিম খাচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজু মিয়া ঃ
নরসিংদী জেলা কারাগারে দিন দিন বেড়েই চলেছে বন্দীর সংখ্যা। ইতিমধ্যে ধারণ ক্ষমতার ৫ গুণ বেশী বন্দী নরসিংদী জেলা কারাগারে রয়েছে। যার ফলে দৈনিন্দিন কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খাচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ।
এই জেলা কারাগারটি উদ্ধোধন হওয়ার পর বন্দী ধারণ ক্ষমতা ২৪৪ জন থাকলেও বন্দী রয়েছে ১১৪৫ জন। যার ফলে কারা কর্তৃপক্ষ থাকার জায়গা নিয়েও সংকট তৈরী হচ্ছে। এমনকি একই ওয়ার্ডে ১৩৪ থেকে ১৮৫ জন্য রয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা যায়। ইতিমধ্যেই এই চাপ থেকে কিছুটা সহানুশীল হতে টিনশেট নির্মাণ করার প্রস্তুতি চলছে বলে কারা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানা যায়।
জেলা কারাগারে ওয়ার্ড-৪ এর কোর্ড রাইটার রফিকুল জানান, কারাগারের ভেতরে বন্দি হাজতি কয়েদীদের মাঝে কোনো প্রকার ক্ষোভ নেই। বিগত কয়েক বছর যাবৎ নরসিংদী কারাগারে বন্দিরা মানষিক ভাবে খুব ভাল রয়েছে। যোগাযোগের সহজ ব্যবস্থা না থাকলেও বন্দীরা সকল সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। অতীতে পানির সমস্যা থাকলেও এখন তা নেই।
বিগত সময়ে গুটি কয়েক কয়েদী (মেড) হাজতীদের সিট বিক্রি করে টাকা আদায় করলেও এখন তা নেই। হাজতীদের ওপর মানসিক কোন নির্যাতন নেই। বন্দীদের কোনো সমস্যা হলেই তাৎক্ষণিক কারা হাসপাতালে চিকিৎসা পাচ্ছে। অনেক জটিল রোগিও কারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছে। কিন্তু ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশী বন্দী হওয়ায় এখন প্রতিনিয়ত সমস্যা পোহাতে হচ্ছে।
হাসপাতাল ওয়ার্ডের এক বন্দী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কারাগারের সব কিছু ঠিক আছে। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে ৬ গুণ বেশী বন্দী থাকলেও প্রশাসনের শৃঙ্খলায় তেমন কোনো সমস্যা হয় না। অতীতে বন্দীর সংখ্যা কম হলেও তাদের নানান ভাবে হয়রানি করা হত। আমরা চাই কারাগারের এ সুন্দর অবস্থা অব্যাহত থাকুক। তবে বন্দীদের দেখার ঘরটি ছোট হওয়ায় আগত লোকজনের সাথে কথা বলতে নানা দূর্ভোগ পোহাতে হয়। এ ঘরটি আর একটু বড় হলেই আর কোনো সমস্যা থাকবে না।
নরসিংদী জেলা কারাগারের জেলার মজিবুর রহমান রুদ্রকে জানান, কারাবিধি মোতাবেক এবং বন্দীরা প্রাপ্যতা অনুসারে তাদের খাবার সরবরাহ সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। নরসিংদী কারাগার সম্পূর্ণ মাদকমুক্ত রাখা হয়েছে। প্রতিনিয়ত নবাগত ও পুরাতন বন্দীদের তল্লাশী সহ কারাগারে ডিউটিতে গমনকারী কারারক্ষীদেরকে ও নিয়মিত তল্লাশী করে দেওয়া হচ্ছে যাতে করে কোন ভাবেই মাদকদ্রন্য প্রবেশ করতে না পারে। বর্তমানে ধারণ ক্ষমতার প্রায় ৫গুন বেশি বন্দী অবন্থান করছে। কারাভ্যন্তরে ১০০ জন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি টিনসেট ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। আশা করি চলতি মাসের মধ্যেই উক্ত ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হবে। তাহলে বন্দীদের আবাসন সমস্যার কিছুটা লাঘব হবে। তাছাড়া বন্দী সংখ্যাধিক্যের কারণে এবং অত্র কারাগারটির আশেপাশের এলাকার তুলনায় নিচু হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। অত্র কারণেই সরকার কর্তৃক শিবপুর থানাধীন কামারগাঁও ও কারারদি মৌজায় ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে রোডের উপরে ৬০,৭৮,৫৭,৮৩৭/২ টাকা ব্যায় করে ২০ একর জমি অধিগ্রহন করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *