‘ভাই, কাল ভোর ৫টায় আমার সৌদির ফ্লাইট। করোনার রিপোর্ট কি কাল ফ্লাইটের আগে পাবো? না পেলে আমার সব শেষ হয়ে যাবে। অনেক কষ্ট করে বিমানের টিকিট পেলাম। এখন করোনা টেস্টের রিপোর্টের জন্য যদি আটকে যাই, তাহলে কী হবে?’
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর মহাখালীর ডিএনসিসি মার্কেটে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষাকেন্দ্রে দায়িত্বরত কর্মীদের এসব কথা বলেন সৌদি প্রবাসী মোহাম্মদ আবদুল হাই হাওলাদার।
ওই নমুনা পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকেই ভিড় লেগে আছে। প্রবাসীরা প্রথমে করোনা পরীক্ষার জন্য কুপন সংগ্রহ করছেন। পরে পাসপোর্ট, ভিসা ও টিকিট দেখিয়ে ফরম পূরণ করে নমুনা দিচ্ছেন। তবে ফ্লাইটের আগে করোনা পরীক্ষার সনদ পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন অনেক প্রবাসী।
আবদুল হাই হাওলাদার এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘কয়েক মাস আগে আমি সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে আসি। কিন্তু করোনার কারণে আর ওই দেশে যেতে পারিনি। কয়েক দিন ধরে অনেক কষ্ট করে সৌদি এয়ারলাইন্সের টিকিট সংগ্রহ করেছি। কিন্তু পরে শুনি, সৌদি যেতে হলে করোনা টেস্টের রিপোর্ট নিতে হবে। বুঝতে পারছি না, এত অল্প সময়ে কীভাবে করোনা টেস্ট করে রিপোর্ট পাবো। তাই খুব চিন্তার মধ্যে আছি।’
আরেক সৌদি প্রবাসী মোহাম্মদ কুদ্দুস ইসলাম বলেন, ‘করোনা টেস্ট করাতে সকাল থেকেই এখানে আছি। টোকেন নিয়েছি। সিরিয়াল পড়েছে ২০০০ ওর ওপরে। তাই বসে আছি। আমার ফ্লাইট ১৫ তারিখ। আগামীকালের মধ্যে করোনার রিপোর্ট পেলে একটু নিশ্চিন্ত হতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘বিমানের টিকিট পেতে আমাদের অনেক ভোগান্তি সইতে হয়েছে। আশা করি, ঝামেলা ছাড়াই করোনার রিপোর্ট পাবো।’
সেখানে অবস্থানরত অন্য প্রবাসীরা জানান, অনেকে ফ্লাইটের কিছুক্ষণ আগে করোনা পরীক্ষার সনদ পাচ্ছেন। এতে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে। তাই দ্রুত পরীক্ষার সনদ দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। আবার কম সময়ে টেস্ট করলে ভুল রিপোর্ট আসতে পারে। তা বিদেশযাত্রায় বাধা হতে পারে। তাই নির্ভুলভাবে পরীক্ষা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে নমুনা পরীক্ষাকেন্দ্রের হেল্প ডেস্কের এক কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাইনুল হাসান বলেন, ‘আমাদের এখানে সুশৃঙ্খলভাবে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। আমরা এখানে কিছু বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি, যেমন: যাদের ফ্লাইটের সময় খুব অল্প, তাদের জন্য আলাদা বুথ রাখা হয়েছে। তাদেরকে খুব তাড়াতাড়ি রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। প্রবাসীরা মেসেজের মাধ্যমেই জানতে পারবেন তাদের রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে কি না। তারা সেই মেসেজ দেখিয়ে যেকোনো কম্পিউটারের দোকান থেকে তা প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। এমনকি বিমানবন্দরেও এ রিপোর্ট প্রিন্ট করার ব্যবস্থা আছে।’